সম্পদ সম্পর্কে কোরআনের দশটি টিপ্‌স














ইন্টার্নেটে ইউটিউবে আপনি wealth লিখে সার্চ দিন। দেখবেন হাজার হাজার ভিডিও আসবে, কিভাবে সহজে ধনী হওয়া যায়। অনেকেই তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলবেন। কিভাবে তিনি বারবার বিফল হয়েও সফলতার মুখ দেখেছেন। খেয়াল করে দেখবেন, একজনের জন্য যেটা Click করেছে, অন্যগনের ক্ষেত্রে সেটা ধ্বংস ডেকে এনেছে। আপনি কোন স্ট্যান্ডার্ড খুঁজে পাবেন না।

আবার এমন মানুষও খুঁজে পাবেন, যিনি সম্পদ নিয়ে কোন তোয়াক্কাই করেন না। কারণ ‘টাকাতো হাতের ময়লা’। যারা কিছুটা হলেও অর্থনীতি বুঝেন, তারা আবার হাই প্রেসারের রোগী হয়ে যান, যখন বিখ্যাত ইকোনমিস্টদের আসন্ন অর্থনৈতিক ধ্বস সম্পর্কে চুলচেরা টকশো শুনে থাকেন।

এখন আসলে সময় এসেছে কোরআনের দিকে ফিরে আসার। সমস্ত দুশ্চিন্তা আর হতাশা নিবারণ করে এই কিতাব। কোরআন কী বলে? সম্পদ খারাপ? ভালো? নাকি এসব কিছুই না! কোরআন বলে.........

১।   ধন-সম্পদ আল্লাহর নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম নিয়ামত। কিন্তু সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি, অথবা সম্পদ না থাকা হতে পারে মহান আল্লাহপাকের তরফ থেকে মুসলিম বান্দার জন্য পরীক্ষা।

এবং অবশ্যইআমি তোমাদিগকেপরীক্ষা করবকিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল জানের ক্ষতি ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমেতবে সুসংবাদদাও সবরকারীদের (:১৫৫)

২।   সম্পদের প্রতি আসক্তি কখনই মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।

সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার(:১৭৭)

৩।  সম্পদ উপার্জন হতে হবে হালালভাবে, হারামভাবে নয়।

তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না(২:১৮৮)

৪।   সম্পদ বেশী হলে সে অনুপাতে দানও ততো বেশী হতে হবে।

...... আর সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং কম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী যে খরচ প্রচলিত রয়েছে তা সৎকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব।(২:২৩৬)

৫।  আল্লাহর রাস্তায় খরচ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। কারণ এর সুফল দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই কয়েকশ গুণ বেশী পাওয়া যায়।

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ(২:২৬১)

৬।  দান হতে হবে সাবলীল, বিনয়ের সাথে।

হে ঈমানদারগণ!তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না”(২:২৬৪)

৭।   কাফের ও মুশরিকদের সহায় সম্পত্তি দেখে মুমিনরা প্রভাবিত হয়না।

সুতরাং তাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে আল্লাহর ইচ্ছা হল এগুলো দ্বারা দুনিয়ার জীবনে তাদের আযাবে নিপতিত রাখা এবং প্রাণবিয়োগ হওয়া কুফরী অবস্থায়।(৯:৫৫)

৮।  সম্পদ কোন সময় দুশ্চিন্তা, চিত্তকে বিক্ষিপ্ত করা, আল্লার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আর যখন নাযিল হয় কোন সূরা যে, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর উপর, তাঁর রসূলের সাথে একাত্ন হয়ে যুদ্ধ কর; তখন বিদায় কামনা করে তাদের সামর্থøবান লোকেরা এবং বলে আমাদের অব্যাহতি দিন, যাতে আমরা (নিস্ক্রিয়ভাবে) বসে থাকা লোকদের সাথে থেকে যেতে পারি।”(৯:৮৬)

মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে যারা কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।(৬৩:৯)

৯।  সম্পত্তি ভালো হতে পারে, তবে সৎ কর্ম উত্তম।

ধনৈশ্বর্য সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ আপনার পালনকর্তার কাছে প্রতিদান প্রাপ্তি আশা লাভের জন্যে উত্তম।(১৮:৪৬)

১০।  দুনিয়াতে রেখে যাওয়া সম্পদ দুনিয়ার জন্যই, কবরে বা আখিরাতে কোন কাজে আসেনা।

যে দিবসে ধন-সম্পদ সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না; (২৬:৮৮)

আল্লাহ আমাদের আমলের তৌফিক দান করুন।




No comments:

Powered by Blogger.