ইস্তিগ্ফারের সুন্নত পদ্ধতি- সায়েদুল ইস্তিগ্ফার
একবার ভাবুন,
আপনার হতাশা, উদ্বিগ্নতা অথবা মানসিক কষ্টের কারণ আসলে কি? থাকলে কতগুলো? এমন কি
কোন উপায় নেই যার মাধ্যমে এ থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব? যদি এমন কোন উপায় পেয়ে যান,
তাহলে নিশ্চয় এর মূল্য অনেক হবে আপনার কাছে।
আমাদের নবী (সাঃ)
বলেছেন, “ যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকবে, আল্লাহপাক সেই বান্দাকে প্রত্যেক
বিপদ/দুর্দশা থেকে মুক্ত হবার পথ দেখিয়ে দিবেন এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিবেন,
এবং এমন জায়গা থেকে রিযিক দিবেন যা সে কল্পনাও করেনি।” [আবু দাউদ]
বুঝতেই পারছেন,
সেই উপায় হলো আল্লাহর কাছে অবিরাম ক্ষমা চাওয়া-যার আরেক নাম ইস্তিগ্ফার। ইস্তিগ্ফার
মানে হল মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইস্তিগফারের ফযীলত আসলে আমাদের
কল্পনার বাহিরে। রাসুল (সাঃ) আমাদের যে সমস্ত সুন্নতী দোয়া শিখিয়েছেন, তার মধ্যে
নিচের দোয়াটিকে শ্রেষ্ঠ ইস্তিগ্ফার বলে আখ্যা দিয়েছেন।
শাদ্দাদ ইবনু আউস
হতে বর্ণিত।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার
এ দু‘আ
পড়া- ‘‘হে আল্লাহ!
তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই
আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই
গোলাম। আমি
যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে
কৃত প্রতিজ্ঞা ও
অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার
সব কৃতকর্মের কুফল
থেকে তোমার কাছে
আশ্রয় চাচ্ছি।
তুমি আমার প্রতি
তোমার যে নি‘য়ামত
দিয়েছ তা স্বীকার
করছি। আর
আমার কৃত গুনাহের
কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে
ক্ষমা কর।’’
যে ব্যক্তি দিনে
সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার
পড়বে আর সন্ধ্যা
হবার আগেই সে
মারা যাবে, সে
জান্নাতী হবে।
আর যে ব্যক্তি
রাতে প্রথম ভাগে)
দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে
এ দু‘আ
পড়ে নেবে আর
সে ভোর হবার
আগেই মারা যাবে
সে জান্নাতী হবে।
(সহীহ বুখারী)
দোয়াটা শুরুই হয়
মহান আল্লাহ পাকের সাথে তাঁর বান্দার কী সম্পর্ক সেটার বর্ণনার মাধ্যমে। বান্দাও
দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহপাকের প্রশংসা করে থাকে।
পরবর্তী অর্থগুলোর
দিকে তাকালে দেখা যায়, বান্দা তাঁর গুনাহ, পাপ, ভুলভ্রান্তি গুলো আল্লাহর দরবারে
সমর্পণ করছে। এর অর্থই হল বান্দা বিশ্বাস করছে, যে একমাত্র আল্লাহই তাঁর
আশ্রয়স্থল। আল্লাহ ছাড়া কে আছে তাঁর পাপ ক্ষমা করবে? তাঁকে আশ্রয় দিবে!? একমাত্র
আল্লাহই পারেন তাঁর গুনাহ খাতা থেকে সব গুনাহ মুছে দিয়ে নেকী দিয়ে পরিবর্তন করে
দিতে। এই দোয়া এই শিক্ষা দেয় যে, বান্দার
সবসময় উচিত মহান আল্লাহপাকের শুকরিয়া আদায়ের অবস্থায় থাকা এবং সেই সাথে ইস্তিগফার
করতে থাকা।
·
এই দোয়াটি প্রত্যেক
মুমিনের সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত পাঠ করা উচিত। (ফযর ও আসরের নামাযের পর)
·
সঠিক শুদ্ধ উচ্চারণ
এবং অর্থ সহকারে দোয়াটি শেখা উচিত যেন আন্তরিকতার সাথে দোয়াটা পাঠ করা যায়।
·
এই সুন্নাহটিকে নিয়মিত
আমল করা উচিত। সেই সাথে অন্যদের শিক্ষা দেয়া উচিত।
No comments: