বিজ্ঞানের আলোকে রোজার (Fasting) উপকারিতা

3:06:00 PM

রমজান মাসের রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর রোজা (fasting in Ramadan) রাখা ফরজ যদি না শরীয়ত মন্ডিত কোন ওজর না থাকে। আমরা নিচে রোজার কিছু উপকারিতা বিজ্ঞানের আলোকে আলোচনা করা হলোঃ





প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে ( Fasting on Inflammation)





মানুষের দেহে বিভিন্ন সময়ে প্রদাহ হয়ে থাকে। প্রদাহ হওয়ার কারণে মানুষের দেহে বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে। যেমনঃ হূদরোগ, ক্যান্সার অথবা আর্থ্রাইটিস। রোজা রাখার ফলে মানুষের দেহে এ প্রদাহের মাত্রা কমে যেতে পারে। বিজ্ঞান বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখেছে যে, প্রদাহ রোধ এর ব্যাপারে রোজার বা Fasting এর একটি অনন্য ভূমিকা আছে। ৫০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর এ সংক্রান্ত একটি পরীক্ষা চালানো হয়। এ পরীক্ষায় সেই ৫০ জন ব্যক্তি পুরো তিন মাস রোজা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে এই ৫০ জন ব্যক্তিকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হারে প্রদাহের মাত্রা কমে গিয়েছে। ঠিকই এরকমেরই আরেকটা পরীক্ষা করা হয়েছে, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি দৈনিক ১২ ঘন্টা রোজা রেখেছে এবং এটি করেছে পুরো এক মাস। তাদের ক্ষেত্রেও একই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।





হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে। ( ( Fasting on Heart Diseases)





বর্তমানে মানুষের মাঝে হূদরোগ অত্যন্ত কমন একটি বিষয়। যে সমস্ত রোগে মানুষ মারা যায় তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে হূদরোগ। বিশ্বব্যাপী দেখা যায় যে ৩১.৫ শতাংশ লোকই হৃদ রোগে মৃত্যুবরণ করে। নিয়মিত রোজা রাখার ফলে মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। ১১০ জন স্থূল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। সেখানে তাদের সবাইকে নিয়মিত টানা এক সপ্তাহেরও বেশী রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে যখন তাদের শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তখন লক্ষ্য করা যায় যে, তাদের সবারই ব্লাড প্রেসার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। সেইসাথে কোলেস্টরলের মাত্রা ও কমে গিয়েছে। আরেকটি পরীক্ষা চালানো হয় ৪৬২৯ জন ব্যক্তির উপর যাদের একই সাথে নিম্ন পর্যায়ে করোনারি হূদরোগ এবং নিম্নমাত্রায় ডায়াবেটিস ও ছিল। এই দুটোর সমন্বয়ের ফলে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ছিল অনেক বেশী। রোজা রাখার ফলে তাদের এই দুটো ক্ষেত্রেই বেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গিয়েছে।







https://musafiron.com/%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a7%ac-%e0%a6%9f%e0%a6%bf/





মস্তিষ্কের গঠনে অসামান্য ভূমিকা (Fasting on Brain development)





কিছু প্রাণীর উপর তাদের ব্রেন ফাংশন এবং ব্রেন স্ট্রাকচার এর উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়।প্রাণীগুলোকে না খেতে দিয়ে রোজা রাখার মতো অবস্থায় রাখা হয় এবং পরবর্তীতে পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তাদের ব্রেইন এর কার্যকারিতা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে এবং ব্রেনের স্ট্রাকচার খুব ভালোভাবে সুগঠিত হয়েছে। নতুন নতুন স্নায়ু কোষ তৈরি হয়েছে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা অধিক হারে বৃদ্ধি করে দিয়েছে। এছাড়াও আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, রোজা রাখলে মানুষের এইচ জি এইচ ( HGH ) হরমোন বেড়ে যায়। এইচ জি এইচ হরমোন হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রোটিন হরমোন যার উপস্থিতিতে মানুষের দেহ বৃদ্ধি পায়, ওজন কমে যায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি মানুষের দেহের মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধি করে। ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। তারা মাত্র ২ দিন রোজা রাখে। এইতো মাত্র ২ দিন রোজা রাখার পর এই যখন তাদের HGH প্রোটিন হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয় তখন দেখা যায় তা পাঁচগুণ বেড়ে গেছে।







দীর্ঘস্থায়ী যৌবন লাভ করা যায় ( ( Fasting on Youth)





বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে রোজা রাখার ফলে মানুষের বুড়িয়ে যাওয়ার হার অনেক কমে যায় এবং তার আয়ু বৃদ্ধি পায়। এই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাটি চালানো হয় ইঁদুরের ওপর। ইঁদুরকে না খাইয়ে রেখে রোজা রাখার মত অবস্থা করা হয়।। পরবর্তীতে দেখা যায় যে সমস্ত ইঁদুরকে না খাইয়ে রাখা হয়েছিল তাদের বার্ধক্য অনেক দেরিতে এসেছে এবং সেই সাথে তাদের আয়ু ৮৩শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ যে সমস্ত ইঁদুরকে না খাইয়ে রাখা হয়নি তাদের ক্ষেত্রে সেটা দেখা যায়নি। visit https://islamqa.info





টিউমার প্রতিরোধ করে থাকে ( ( Fasting on Tumour)





রোজা রাখলে তা মানুষের দেহে টিউমার সেল বা টিউমার কোষ তৈরি হতে দেয় না এবং তাতে কঠিন বাধা প্রদান করে। ঠিক কেমোথেরাপি যেমন মানুষের দেহে কাজ করে রোজাও তেমনি একই কাজ করে। এসংক্রান্ত পরীক্ষা যদিও করা হয়েছে প্রাণীর উপর। তবুও মানব দেহে রোজা এই একই রকমের প্রভাব বিস্তার করবে, সেটাই বিজ্ঞানীরা আশা করছেন।




No comments:

Powered by Blogger.